সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক :
ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একজন নারী সাংবাদিক এবার সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সাংবাদিক এম জে আকবরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্টের একটি ব্লগে এমন অভিযোগ করেছেন। বলেছেন, কয়েক বছর আগে এম জে আকবর যখন দ্য এশিয়ান এইজ পত্রিকা প্রধান সম্পাদক ছিলেন তখন তাকে তিনি ধর্ষণ করেছেন। তবে আকবরের আইনজীবি এমন অভিযোগকে মিথ্যা বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ খবর দিয়েছে ভারতের অনলাইন জি নিউজ। এতে বলা হয, সম্প্রতি অন্য নারীরা এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যেসব যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন তাতে তার ‘মাথা গুরে গেছে’। তিনি ওই ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, তার বয়স তখন ২২ বছর। ওই সময় তিনি এশিয়ান এইজ পত্রিকার নিউজরুমে সবে কাজ শুরু করেছেন।
সেখানে কর্মরতদের বেশির ভাগই ছিলেন নারী। তার ভাষায়, নয়া দিল্লিতে আকবরের অধীনে কাজ করার সময় আমরা ছিলাম তারকার মতো। তিনি ছিলেন খুবই বিখ্যাত। রাজনীতি নিয়ে দুটি চমৎকার বই লিখেছেন। তাছাড়া তিনি শীর্ষ স্থানীয় একজন সম্পাদক। তখন এম জে আকবরের বয়স ৪০ এর কোটায়। তিনি সব সময় আমাদের সচেতন করতেন যেন আমরা সিনিয়র সাংবাদিকদের কাজকে অনুসরণ করি বা তাদের কাজ সম্পর্কে সচেতন থাকি। আমাদের লেখা রিপোর্টগুলো তিনি লাল রঙের কালির মন্ট ব্লাঙ্ক কলম দিয়ে মার্ক করতেন। তা ফেলে দিতেন। আবার কখনও তা ময়লা রাখার বাক্সে ছুড়ে ফেলতেন। এমন কোনো দিন ছিল না যেদিন তিনি আমাদের কারো সঙ্গে তিনি তীব্রস্বরে চিৎকার করতেন না।
ওই সাংবাদিক আরো লিখেছেন, তার বয়স যখন ২৩ বছর তখন তিনি মতামত বিভাগের সম্পাদক হন। এটা ছিল ১৯৯৪ সালের কথা। সে সময়েই তার সঙ্গে প্রথম হয়রানির ঘটনা ঘটে। ওই নারী সাংবাদিক লিখেছেন, আমি মতামত বিষয়ক একটি পেজ সম্পূর্ণ করে তাকে দেখাতে নিয়ে গেলাম। সেখানে কিছু চতুর শিরোনাম ছিল। তিনি আমার কাজের প্রশংসা করলেন। হঠাৎ আমাকে চুমু দেয়ার চেষ্টা করলেন। আমার শরীর কেঁপে উঠলো। আমি দ্রুত ওই অফিসকক্ষ থেকে বেরিয়ে এলাম। আমার মুখ তখন লাল হয়ে গেছে। আমি দ্বিধান্বিত। লজ্জিত। আমি যেন আমার মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছি। এর কয়েক মাস পরে দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে। একটি ম্যাগাজিনের উদ্বোধন করতে আমাকে মুম্বইয়ে ডেকে নেয়া হলো। তিনি আমাকে তাজ হোটেলে তার কক্ষে ডেকে নিলেন। লে-আউট দেখতে চাইলেন। আবারও তিনি আমার কাছে এলেন আমাকে চুমু দিতে। এ সময় আমি তার কাছ থেকে ছুটতে এ রকম লড়াই করলাম। তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম। তার নিজের মুখে আঁচড় কাটলাম এবং দৌড়ে বেরিয়ে এলাম। কান্না শুরু করলাম। ওই দিন রাতেই আমি এক বন্ধুকে মুখে আঁচড় দেখালাম।
এর পর তাকে বরখাস্ত করার হুমকি দেন আকবর।
এরপর তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে। তখন তার ভাষ্য অনুযায়ী এম জে আকবর তাকে ধর্ষণ করেন। একটি রিপোর্ট করতে তখন তিনি গিয়েছিলেন জয়পুরে। কাজ নিয়ে আলোচনা করতে তাকে আকবরের হোটেলরুমে ডেকে পাঠানো হলো। তার ভাষায়, আকবরের হোটেল রুমে। আমি তার সঙ্গে লড়াই করলাম। তিনি আমার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তিনি আমার পোশাক টেনে ছিড়ে ফেললেন এবং আমাকে ধর্ষণ করলেন। আমি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করার চেয়ে নিজে লজ্জায় ভেঙে পড়লাম। এ ঘটনা আমি এর আগে কাউকে বলি নি। কেউ কি আমাকে বিশ্বাস করবেন? আমি আমাকে দায়ী করি। কেন আমি ওই হোটেলে গিয়েছিলাম?